আপনার স্কিনকেয়ার রুটিন ডিজাইন করার জন্য আপনার স্কিন টাইপ বোঝাটা প্রথম এবং সবচেয়ে জরুরি স্টেপ। স্কিন টাইপ হলো স্কিনের ন্যাচারাল বৈশিষ্ট্য, যা মূলত তেল উৎপাদনের মাত্রা (সিবাম) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। নিচে সব ধরনের স্কিন টাইপ নিয়ে আলোচনা এবং কীভাবে আপনার স্কিন টাইপ বুঝবেন, সেই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলোঃ
স্কিন টাইপ বোঝার পদ্ধতি: "বেয়ার ফেস মেথড"
স্কিন টাইপ বোঝার জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হলো এই 'বেয়ার ফেস মেথড', যা আপনার স্কিন স্বাভাবিক অবস্থায় কেমন আচরণ করে তা দেখতে সাহায্য করে।
১. ক্লিনজিং: একটা জেন্টল ক্লিনজার দিয়ে আপনার মুখ পরিষ্কার করুন।
২. অপেক্ষা করুন: মুখ মুছে নিয়ে প্রায় ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা কোনো প্রোডাক্ট অ্যাপ্লাই করবেন না।
৩. অবজার্ভেশন: আয়নার সামনে আপনার স্কিনকে মনোযোগ দিয়ে দেখুন।
প্রধান স্কিন টাইপ এবং তাদের বৈশিষ্ট্য:
১. তৈলাক্ত স্কিন (Oily Skin)
● অবজার্ভেশন: ৩০ মিনিট পর আপনার সম্পূর্ণ ফেস (বিশেষ করে টি-জোন: কপাল, নাক এবং চিবুক) একটা চকচকে (Shiny) এবং তৈলাক্ত দেখাবে।
● বৈশিষ্ট্য: পোরসগুলো স্পষ্টভাবে বড় এবং অ্যাকনে, ব্ল্যাকহেডস হওয়ার প্রবণতা বেশি।
২. শুষ্ক স্কিন (Dry Skin)
● অবজার্ভেশন: ৩০ মিনিট পর আপনার স্কিন টানটান (Tight) এবং শুষ্ক অনুভূত হবে। কোনো তেল বা শাইনিভাব দেখা যাবে না।
● বৈশিষ্ট্য: পোরসগুলো খুবই ছোট এবং প্রায় অদৃশ্য থাকে। স্কিন রুক্ষ ও খসখসে লাগতে পারে।
৩. নরমাল স্কিন (Normal Skin)
● অবজার্ভেশন: ৩০ মিনিট পরও আপনার স্কিন কোনো অতিরিক্ত তেল বা টানটান ভাব থাকবে না।
● বৈশিষ্ট্য: পোরসগুলো ছোট এবং খুব কম দৃশ্যমান। সাধারণত কোনো সিরিয়াস সমস্যা বা সেনসিটিভিটি থাকে না।
৪. কম্বিনেশন স্কিন (Combination Skin)
কম্বিনেশন স্কিনকে দুটি প্রধান সাব-টাইপে ভাগ করা যায়, যেখানে স্কিনের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখা যায়:
● অয়েলি টু কম্বিনেশন (Oily to Combination):
○ অবজার্ভেশন: আপনার টি-জোন (কপাল, নাক, চিবুক) খুব বেশি তৈলাক্ত ও চকচকে দেখাবে এবং পোরসগুলো বেশ বড়। কিন্তু আপনার গালের অংশ নরমাল বা হালকা শুষ্ক থাকতে পারে।
○ বৈশিষ্ট্য: অ্যাকনে বা ব্রেকআউটস সাধারণত টি-জোনে সীমাবদ্ধ থাকে।
● ড্রাই টু কম্বিনেশন (Dry to Combination):
○ অবজার্ভেশন: আপনার গাল, চোখের চারপাশ এবং চুলের রেখা বরাবর স্কিন টানটান ও শুষ্ক অনুভূত হবে। কিন্তু আপনার নাক এবং চিবুক সামান্য তৈলাক্ত বা নরমাল থাকতে পারে।
○ বৈশিষ্ট্য: অ্যাকনে বা ব্রেকআউটস কম হয়, তবে গালের অংশে শুষ্কতা বা ফ্লেকিনেস দেখা যায়।
সেনসিটিভিটি: একটি সেকেন্ডারি ফ্যাক্টরঃ
অনেকেই সেনসিটিভ স্কিন কে, স্কিন টাইপ ভেবে ভুল করে। যেকোনো স্কিন টাইপই সেনসিটিভ হতে পারে। সেনসিটিভ স্কিন খুব সহজে লালচে হয়ে যায়, জ্বালা করে, বা নতুন প্রোডাক্টে দ্রুত নেগেটিভ ইফেক্ট দেখা যায়।
আপনার স্কিন টাইপ সঠিকভাবে বুঝতে পারলে আপনার স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টগুলো টার্গেটেডভাবে চয়েস করা এবং আপনার রুটিনকে পারফেক্টলি কাস্টমাইজ করা অনেক সহজ হয়ে যাবে।